দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে শুরু হওয়া এই অগ্নিকাণ্ডে বৃহৎ ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের দীর্ঘ ৬ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এই ঘটনার পেছনে নাশকতা আছে কি না, তা নিয়ে উঠেছে নতুন আলোচনা।
ঘটনার পর সচিবালয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “তদন্ত শেষ হলে বোঝা যাবে এটি নাশকতা নাকি কেবল দুর্ঘটনা। সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন ঘটনা আমাদের জন্য অবশ্যই চিন্তার বিষয়।”
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রতিক্রিয়া বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, “আমাদের মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি ও অর্থলোপাটের বিষয়ে আমরা কাজ করছিলাম। এই অগ্নিকাণ্ড সেই ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ। যারাই এই ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকবে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও জানান, নীলফামারিতে থাকা সত্ত্বেও দ্রুত ঢাকায় ফিরে এসে এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী সোহানুজ্জামান নয়ন নিহত হন। পানির পাম্প থেকে সংযোগ দিতে সড়ক পার হওয়ার সময় একটি ট্রাকের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে ৬টি মন্ত্রণালয় এবং একাধিক বিভাগের অফিস রয়েছে। এই ভবনে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। তবে তদন্ত কমিটির কাজ শুরু হলে অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরিষ্কার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।